৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় – ব্রণের কালো দাগ দূর করার উপায়

আপনি কি ৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় এবং ব্রণের কালো দাগ দূর করার
উপায় জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি একদম ঠিক জায়গায় এসেছেন। কেননা আমরা
আমাদের এই পোস্টে ৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় এবং ব্রণের কালো দাগ দূর করার
উপায় সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়বস্তু বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।সুতরাং,
সম্পূর্ন পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ৭ দিনে ব্রণ
দূর করার উপায় এবং ব্রণের কালো দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন।

৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় - ব্রণের কালো দাগ দূর করার উপায়

আমাদের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি আরও
যেসব বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে পারবেন সেগুলো হলো- ব্রণ কেন হয়, ব্রণের
গর্ত দূর করার উপায়, ব্রণ দূর করার ক্রিম এবং ব্রণের দাগ দূর করার
ক্রিম সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় – ব্রণের কালো দাগ দূর করার
উপায়

৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় – ব্রণের কালো দাগ দূর করার উপায়ঃ ভূমিকা

ত্বকে ব্রণ বা পিম্পলের সমস্যা প্রধানত বয়সন্ধিকালে দেখা দিলেও প্রায় সব বয়সী
নারী-পুরুষের ত্বকেই এই সমস্যাটি লক্ষ্য করা যায়। ত্বকে ব্রণ বের হওয়া
মানে ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়া এবং ত্বকের সৌন্দর্য নিয়ে আমাদের মনে
আতঙ্ক তৈরি হওয়া। তাই তো সব বয়সের নারী কিংবা পুরুষ তাদের ত্বকে ব্রণের
সমস্যা দূর করতে ইন্টারনেটের বিভিন্ন জায়গায় ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে
অনুসন্ধান করে থাকে। আর এইরকম ব্রণের সমস্যায় ভুক্তভুগি নারী-পুরুষের
অনুসন্ধানের কথা মাথায় রেখে আজকে আমরা ৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় নিয়ে
আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। 

সুতরাং, অন্য কোথাও না গিয়ে ধৈর্য ধরে সম্পূর্ন পোস্টটি পড়ে নিন। তাহলে আপনি
অবশ্যই ৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানতে পারবেন। তবে
৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা শুরু করার পূর্বে ব্রণ কেন হয়
সেই সম্পর্কে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে ব্রণ কেন
হয় তা জেনে নেই।

ব্রণ কেন হয়

ডার্মাটোলজিস্টদের মতে ত্বকে ব্রণ হওয়ার পেছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ
রয়েছে। তার মধ্যে ত্বকে ব্রণ হওয়ার পেছনের প্রধান কারণটি হলো ত্বকের
লোমকূপ থেকে সেবাম তেল বের হতে না পারা। সাধারণত ত্বকের মধ্যে থেকে সেবাম নামক এক
ধরনের তেল নিঃসৃত হয়। যেটা মূলত ত্বকের সেবাসিয়াস নামক গ্রন্থি
থেকে নিঃসৃত হয়। কিন্তু যখন ত্বকের উপর বিভিন্ন ধরনের ধুলাবালি কিংবা
মেকাপের আস্তরণ পড়ে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায় এবং সেবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে
সেবাম তেল নিঃসৃত হতে পারে না তখন ত্বকে ব্রণ বের হয়। 

আরো পড়ুনঃ সোরিয়াসিস রোগ কেন হয় – সোরিয়াসিস থেকে মুক্তির উপায়

অর্থাৎ, ত্বকের লোমকূপ থেকে সেবাম নামক তেল বের হওয়ার প্রক্রিয়াটি ত্বকের জন্য
একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া আর যখন বিভিন্ন কারণে এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াটি
ব্যাহত হয় তখনই মূলত ত্বকের উপর ব্রণ বের হয়। এছাড়াও ত্বকে ব্রণ কেন বের
হয় বা ত্বকে ব্রণ বের হওয়ার পেছনে আরো কতগুলো উল্লেখযোগ্য কারণ রয়েছে। আর
এই কারণগুলো হলোঃ

  • হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ত্বকে ব্রণ বের হয়।
  • ত্বকে ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণুর সংক্রমনের কারণে ত্বকে ব্রণ বের হয়।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের অভাবে ত্বকে ব্রণ বের হয়।
  • নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেওয়ার অভাবে ত্বকের উপর ময়লা জমে ত্বকে ব্রণ বের হয়।
  • অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করার কারণে ত্বকে ব্রণ বের হয়।
  • অস্বাস্থ্যকর এবং অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে ত্বকে ব্রণ বের
    হয়।
  • ত্বক থেকে অতিরিক্ত ঘাম ঝরার ফলে ত্বকে ব্রণ বের হয়।

এগুলোই ছিল ত্বকে ব্রণ বের হওয়ার পেছনে প্রধান প্রধান উল্লেখযোগ্য
কারণ। আশা করছি আমাদের পোস্টের এই অংশের আলোচনা থেকে আপনি এখন জানতে পেরেছেন
যে, ত্বকে ব্রণ কেন বের হয়।  এবার আমরা আমাদের পোস্টের পরবর্তী অংশে আজকের
আলোচনার মূল বিষয় ৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কিত বিষয়বস্তু
নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। 

৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায়

ত্বকের লোমকূপের মধ্যে যখন ত্বকের মৃত কোষ এবং ত্বক থেকে নিঃসৃত হওয়া তেল গুলো
দীর্ঘ সময় ধরে জমে থাকে তখনই সাধারণত আমাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা
দেয়। ত্বকে ব্রণের সমস্যা সমাধান করার ক্ষেত্রে প্রধানত ২টি উপায়
রয়েছে। যার মধ্যে প্রথম উপায়টি হলো কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী সামগ্রীর
সাহায্যে ত্বকের ব্রণ দূর করা এবং দ্বিতীয় উপায়টি হলো প্রাকৃতিক
উপাদানের সাহায্যে ত্বকের ব্রণ দূর করা। যেকোনো কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী
সামগ্রীর সাহায্যে ত্বকের ব্রণ দূর করার বিষয়ে খুব দ্রুত ফলাফল পাওয়া গেলেও এর
বেশ কতগুলো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া রয়েছে। 

তাই ত্বকের ব্রণ দূর করার জন্য প্রাকৃতিক উপাদানের মাধ্যমে ব্রণ দূর করাটাই
সবচেয়ে ভালো। যদিও এই প্রক্রিয়াটি কিছুটা দীর্ঘমেয়াদী তারপরেও এই
প্রক্রিয়ায় আমাদের ত্বকের কোনো রকম ক্ষয়ক্ষতি হয় না। বরং ত্বক ভেতর থেকে আরো
বেশি হেলদি হয়ে ওঠে। তাই আমরা আপনাদেরকে ত্বকের ব্রণ দূর করার জন্য
প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহারের মাধ্যমে ব্রণ দূর করার পরামর্শ দিব। তাহলে চলুন ৭
দিনে ব্রণ দূর করার উপায় হিসেবে প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার করার
প্রক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নেই।

মধু ব্যবহার করার মাধ্যমে ব্রণ দূর করা

ত্বকের ব্রণের সমস্যা সমাধানের জন্য মধু ব্যবহার করা হলে সেটা আপনাকে বিস্ময়কর
ফলাফল দিবে। কেননা মধুর মধ্যে রয়েছে “অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল” উপাদান যা ত্বকের
প্রদাহ কমাতে এবং ব্রণের সমস্যা থেকে সেরে উঠতে অত্যন্ত তড়িৎ গতিতে কাজ করে
থাকে। আর এর জন্য মূলত আপনাকে আপনার ত্বকের ব্রণযুক্ত স্থানে ২ থেকে ৩
ফোঁটা মধু লাগিয়ে রাখতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ মোটা হওয়ার উপায় – মোটা হওয়ার ফর্মুলা

আর এই কাজটা আপনাকে অবশ্যই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে করতে হবে এবং মধু লাগানো
অবস্থায় সারা রাত থাকতে হবে। এরপর পরের দিন সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে পরিষ্কার
ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এই প্রক্রিয়াটি ফলো করলে
ব্রণের সমস্যার সমাধান করার ক্ষেত্রে আপনি খুব দ্রুত ফলাফল লাভ করতে পারবেন।

অ্যালোভেরা ব্যবহার করার মাধ্যমে ব্রণ দূর করা

ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরার কথা উল্লেখ না করলেই নয়। ব্রণের সমস্যা দূর করতে
অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকরী ফলাফল দিয়ে থাকে। অ্যালোভেরা ব্যবহার করার
মাধ্যমে যেমন খুব দ্রুত ত্বক থেকে ব্রণ দূর করা যায় তেমনি ব্রণের কালো দাগ এবং
ব্রণের গর্ত সহ ব্রণের জ্বালাপোড়াও সহজে দূর করা যায়। আপনি আপনার ত্বকে
অ্যালোভেরা ব্যবহার করার জন্য রাতের সময়টাকে বেছে নেবেন। কেননা রাতের বেলায়
ত্বকে যেকোন উপাদান লাগালে সেটা সবচেয়ে বেশি ভালো কাজ করে।

গ্রিন টি ব্যবহার করার মাধ্যমে ব্রণ দূর করা

গ্রিন টি আমাদের ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে এবং ত্বককে পরিষ্কার রাখতে
অত্যন্ত সহায়ক। আর যেহেতু আমাদের ত্বকে ব্রণের
সমস্যাটির উৎপত্তি ত্বকের দীর্ঘমেয়াদি তৈলাক্ততা থেকেই হয়ে থাকে তাই
ব্রণের সমস্যা সমাধান করার ক্ষেত্রে গ্রিন টি খুবই কার্যকারী। ত্বকের ব্রণ
দূর করতে গ্রিন টি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আপনি আপনার দৈনন্দিন ব্যবহৃত
ফেস ক্লিনজারের সঙ্গে গ্রিন টি মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। আর গ্রিন
টি এবং ফেস ক্লিনজার ত্বকের উপর এপ্লাই করার পর অন্তত ২০ মিনিট পর্যন্ত না
ধুয়েই রেখে দিবেন। এরপর যখন ২০ মিনিট সময় পূর্ণ হয়ে যাবে তখন পরিষ্কার
ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলবেন।

টি ট্রি অয়েল এর মাধ্যমে ব্রণ দূর করা

টি ট্রি অয়েল এর মধ্যে রয়েছে “অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল” উপাদান। তাই টি ট্রি
অয়েল ত্বকের ব্রণ দূর করার জন্য খুবই কার্যকারী। ত্বকের ব্রণ দূর করতে
অল্প একটু নারিকেল তেলের সঙ্গে ২ থেকে ৩ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিক্স করে ব্রণের
উপর লাগিয়ে কিছুক্ষণ ধরে ম্যাসাজ করুন। আর এই ভাবে ত্বকের উপর টি ট্রি অয়েল
লাগিয়ে কয়েক ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর কয়েক ঘণ্টা হয়ে গেলে হালকা কুসুম গরম পানি
দিয়ে ত্বক ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

কিছুক্ষণ পর পর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধোয়া

যেহেতু ত্বকের লোমকূপের মধ্যে তেল এবং ময়লা জমে থাকার কারণে ত্বকে ব্রণের সমস্যা
দেখা দেয়। তাই ব্রণের সমস্যা দূর করতে কিছুক্ষণ পরপর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে
মুখ ধোয়া উচিত। যাতে করে লোমকুপের মধ্যে কোন ধরনের তৈলাক্ত উপাদান কিংবা ময়লা
জমে থাকতে না পারে। সেই সঙ্গে কিছুক্ষণ পর পর পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করা
হলে ত্বক হাইড্রেট থাকতে পারে এবং ত্বকের ব্রণের সমস্যা সহজে দূর হয়ে যায়।

উপরে উল্লিখিত এই সমস্ত ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক উপায় গুলো যথাযথভাবে প্রয়োগ করার
মাধ্যমে আপনি মাত্র ৭ দিনে আপনার ত্বককে সম্পূর্ণভাবে ব্রণ মুক্ত করতে সক্ষম
হবেন। 

ব্রণের কালো দাগ দূর করার উপায় 

ত্বকে ব্রণের সমস্যা যেমন একটি গুরুতর সমস্যা তেমনি ব্রণ সেরে যাওয়ার পর
ত্বকের উপরে ছেড়ে যাওয়া ব্রণের কালো দাগ গুলোও একটি গুরুতর
সমস্যা। কারণ ত্বকের উপর কালো দাগ আমাদের সৌন্দর্যকে অনেকাংশে কমিয়ে
দেয়। আর এই ধরনের ব্রণের কালো দাগ দূর করার জন্য আমাদের দরকার ব্রণের কালো
দাগ দূর করার উপায়  সম্পর্কে ভালোভাবে জানা। তাহলে চলুন এবার
ব্রণের কালো দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

লেবুর রস ব্যবহার করা

ব্রণের কালো দাগ দূর করার জন্য লেবুর রস ত্বকের উপর লাগিয়ে রেখে সহজেই ত্বককে
দাগ মুক্ত করা যায়। কেননা লেবুর রসের মধ্যে রয়েছে “সাইট্রিক অ্যাসিড” যা আমাদের
ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। সেইসঙ্গে এই “সাইট্রিক অ্যাসিড” আমাদের ত্বকের
জন্য এক ধরনের সুরক্ষাকবচও বটে। কেননা এই “সাইট্রিক অ্যাসিড” আমাদের ত্বকের উপরে
থাকা জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়া গুলোকে ধ্বংস করে, ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করে এবং
ত্বকের যেকোন দীর্ঘমেয়াদি কালো দাগ সহজেই দূর করে থাকে। 

আরো পড়ুনঃ মাথা ঘোরা কিসের লক্ষণ – মাথা ঘোরার ঔষধের নাম কি

ব্রণের দাগ দূর করতে লেবু ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আপনি চাইলে সরাসরি দাগ যুক্ত
স্থানে লেবুর রস লাগিয়ে নিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করে পরিষ্কার
পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। অথবা আপনার যদি কোন ধরনের অ্যালার্জি জনিত
সমস্যা থাকে তাহলে সরাসরি মুখে লেবুর রস না দিয়ে বেসন কিংবা চালের গুঁড়ার সঙ্গে
মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

মধু ব্যবহার করা

মধু যেমন আমাদের ত্বকের ব্রণের সমস্যা দূর করে থাকে ঠিক তেমনি ত্বকের উপর থেকে
ব্রণের কালো দাগ দূর করতেও সাহায্য করে থাকে। এজন্য আপনি চাইলে আপনার ত্বকের
যেই জায়গায় ব্রণের কালো দাগ রয়েছে সেখানে সরাসরি মধু মাখিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর
ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন অথবা মধুর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করার জন্য মধুর
সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে ত্বকের উপর লাগাতে পারেন।এই
প্রক্রিয়াটি দিনে অন্তত ২ বার নিয়মমাফিক করলে ৭ দিনের মধ্যেই আপনি পার্থক্য
অনুভব করতে পারবেন।

টমেটোর রস ব্যবহার করা

লেবু এবং মধুর মত টমেটোর রস ব্যবহার করেও খুব দ্রুত ত্বকের উপর থেকে ব্রণের কালো
দাগ দূর করা সম্ভব। এর জন্য আপনি সরাসরি টমেটোর রস মুখে ঘষে নিতে পারেন
কিংবা বেসন এবং লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে ভালোভাবে মিশ্রণ তৈরি করে
ত্বকের উপর লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিতে পারেন। এরপর ত্বক ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে
পানি দিয়ে ভালোভাবে ত্বক ধুয়ে নিতে পারেন। আর এই কাজটি দিনে অন্তত ২ বার
করবেন যাতে করে খুব দ্রুত ফলাফল লাভ করতে পারেন।

আলুর রস ব্যবহার করা

আলুর রস আমাদের ত্বকের জন্য ন্যাচারাল ব্লিচ হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ, যেকোন
দীর্ঘমেয়াদি এবং গভীর দাগ দূর করতে আলুর রস অত্যন্ত ফলপ্রসূ একটি
উপাদান। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে একটা ছোট সাইজের আলু ভালোভাবে
ব্লেন্ডারে সাহায্যে ব্লেন্ড করে নিয়ে এর থেকে রস বের করে নিবেন এবং এরপর
এই রস গুলো ব্রণের দাগের উপর লাগিয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে যাবেন। তারপর পরের দিন সকালে
উঠে ভালোভাবে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলবেন। এইভাবে যদি নিয়মিত আলুর রস
ত্বকের উপর ব্যবহার করতে পারেন তাহলে যেমন ত্বকের কালো দাগ দূর হবে তেমনি
প্রাকৃতিক ভাবে ত্বক আরো বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।

প্রিয় পাঠক আশা করছি এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনি ব্রণের কালো দাগ দূর করার উপায় গুলো
সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জেনে গেছেন। এবার যদি আপনার ত্বকের উপর ব্রণের
কালো দাগের পাশাপাশি ব্রণের গর্তও থেকে থাকে তাহলে আমাদের এই পোস্টের
নিচের অংশে উল্লেখিত ব্রণের গর্ত দূর করার উপায় সমূহ মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিন।

ব্রণের গর্ত দূর করার উপায়

ত্বক থেকে ব্রণ সেরে যাওয়ার পরেও ত্বকে থেকে যায় অবাঞ্ছিত কিছু ব্রণের
গর্ত। যা ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ব্যাহত করে। তাই যাতে ব্রণের গর্ত
আমাদের ত্বকের সৌন্দর্যকে কোনোভাবেই নষ্ট করে ফেলতে না পারে সেজন্য ব্রণের গর্ত
দূর করার উদ্দেশ্যে কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। কিন্তু ব্রণের
গর্ত দূর করার জন্য প্রক্রিয়াজাতকৃত প্রসাধনী সামগ্রির কথা চিন্তা করলে প্রথমেই
এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া কিংবা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া গুলোর কথা মনে পড়ে
যায়। 

আর এই ধরনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া জনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সবসময়
কিছু ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক উপায় আমাদেরকে সাহায্য করে থাকে। তাই আমরা
ঠিক করেছি ব্রণের গর্ত দূর করার উপায় হিসেবে আমরা কতগুলো প্রাকৃতিক উপাদানের
ব্যবহার সম্পর্কে আপনাদেরকে অবহিত করব। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু
করা যাক।

অলিভ অয়েল 

ব্রণের গর্ত দূর করতে অলিভ অয়েল জাদুকরী ভূমিকা রাখে। অলিভ অয়েল এর মধ্যে
থাকা ময়েশ্চারাইজিং গুনাগুন খুব দ্রুত ত্বকের গর্ত বা ক্ষত সারিয়ে
তুলে ত্বকের সৌন্দর্য পুনরায় ফিরিয়ে দিতে অনস্বীকার্য অবদান
রাখে। তাই আপনার ত্বকে ব্রণের গর্ত দূর করার জন্য প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে
যাওয়ার পূর্বে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল হাতে নিয়ে ত্বকের উপর ম্যাসাজ করুন এবং
ম্যাসাজ করার পর অলিভ অয়েলকে আপনার ত্বকের উপর সকাল পর্যন্ত রেখে
দিন। এইভাবে প্রতিদিন যদি আপনি আপনার ব্রণের গর্তে অলিভ অয়েল
ম্যাসাজ করেন তাহলে দেখবেন মাত্র ৭ দিনের মধ্যেই লক্ষনীয়
পরিবর্তন অনুভব করতে পারছেন।

মধু

মধু এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যার মধ্যে ত্বকের বেশিরভাগ সমস্যার সমাধান
খুঁজে পাওয়া যায়। আর তাইতো ত্বকে ব্রণের সমস্যা, ব্রণের কালো দাগের সমস্যা এবং
ব্রণের গর্তের সমস্যা নিরাময় করতে মধু ব্যবহারের বিকল্প পাওয়া কিছুটা
দুষ্কর। এজন্য আপনি আপনার ত্বকে ব্রণের গর্ত সারিয়ে তুলতে ঘুমাতে
যাওয়ার পূর্বে কিংবা দিনের যেকোনো একটি সময়ে ত্বকের উপর কয়েক ফোঁটা মধু
লাগিয়ে রাখতে পারেন।

অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরা আমাদের রূপচর্চার ক্ষেত্রে একটি অন্যতম প্রাকৃতিক
আশীর্বাদ। মধুর মত অ্যালোভেরার মধ্যেও রয়েছে ত্বকের অনেকগুলো সমস্যা সমাধান
করার ক্ষমতা। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পেতে চাইলে গাছের
অ্যালোভেরা ব্যবহার করুন। কেননা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন প্রক্রিয়াজাতকরণ
অ্যালোভেরা জেলের তুলনায় সরাসরি গাছ থেকে কেটে নিয়ে আসা অ্যালোভেরার মধ্যে
পুষ্টি উপাদান বেশি পাওয়া যায়। আর এর পাশাপাশি গাছের অ্যালোভেরার মধ্যে কোনরকম
ক্ষতিকারক কেমিক্যাল থাকে না যেটা প্রক্রিয়াজাতকরণ অ্যালোভেরা জেলের মধ্যে
থাকে।

লেবু

লেবুর মধ্যে থাকা “সাইট্রিক অ্যাসিড” ব্রণের দাগ দূর করার পাশাপাশি ব্রণের গর্ত
দূর করতেও কার্যকারী। এজন্য এক চামচ লেবুর রসের সঙ্গে সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে
ব্রণের গর্তের উপর লাগিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন এবং ২০ থেকে ২৫ মিনিট এই
ভাবেই রেখে দিন। তারপর ২০ থেকে ২৫ মিনিট পূর্ণ হয়ে গেলে ভালোভাবে পানি দিয়ে
ধুয়ে ফেলুন। খুব দ্রুত ব্রণের গর্ত দূর করতে এই প্রক্রিয়াটি দিনে ২ বার
ফলো করুন।

ভিটামিন ই তেল

ভিটামিন ই তেল ব্রণের গর্ত সারাতে জাদুর মত কাজ করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে
ভিটামিন ই তেল ত্বকের উপর ব্যবহার করা হলে ত্বক দ্রুত দাগহীন হয়ে
ওঠে। ভিটামিন ই তেল ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে ক্লিনজার দিয়ে
ত্বক পরিষ্কার করে নেবেন এবং এরপর পুরো মুখে ভালোভাবে ভিটামিন ই তেল লাগিয়ে
নিবেন। এভাবে ভিটামিন ই তেল লাগিয়ে ঘুমিয়ে যেতে পারেন কিংবা দিনের বেলায়
লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। ত্বকে ভিটামিন ই
তেল ব্যবহার করে ভালো ফলাফল পেতে চাইলে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ত্বকে ভিটামিন
ই তেল ব্যবহার করুন।

ব্রণ দূর করার ক্রিম

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা তাদের ত্বকে ব্রণ দূর করার জন্য
প্রাকৃতিক পন্থা অবলম্বন করতে চান না। কেননা প্রাকৃতিক পন্থা অবলম্বন করতে
এবং অবলম্বনের মাধ্যমে আশানুরূপ ফলাফল পেতে স্বাভাবিকভাবেই কিছুদিন সময়
লাগে। তাই যারা এতটা সময় ধৈর্য ধরে থাকতে রাজি নয় কিংবা যাদের হাতে খুব
একটা বেশি সময় নেই তারা সাধারণত ব্রণ দূর করার ক্রিম এর নাম সম্পর্কে
জানার জন্য খোঁজ করে থাকে। তাই তাদের উদ্দেশ্যে আমরা কয়েকটি ভালো
ব্র্যান্ডের ব্রণ দূর করার ক্রিম এর নাম নিম্নে উল্লেখ করেছিঃ

  • বায়োজিনের নোভাক্লিয়ার একনি ক্রিম (Novaclear Acne Cream)
  • অ্যাকলিন ক্রিম (Aclene Plus Gel)
  • ফোনা ক্রিম (Fona cream)
  • ফোনা প্লাস (Fona Plus)
  • বায়োজিনের ডার্মাডিকস অ্যান্টি-একনি সিরাম (Dermedics Anti Acne
    Serum)
  • বায়োজিনের ওয়ান নাইট একনি প্যাচ (One Night Acne Solution Patch)
  • পিম্পলেক্স ক্রিম (Pimplex cream)
  • নোমার্ক জেল (Nomark gel)
  • ফ্রেশলুক জেল ক্রিম (Freshlook gel cream)
  • একনিজেল (acnegel)
  • এডাবেন ডুও জেল (Adaben Duo Gel)
  • এডজার জেল (Adgar gel) ইত্যাদি।

ব্রণের দাগ দূর করার ক্রিম

আমরা আমাদের আলোচনার উপরের অংশের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ত্বকে ব্রণ দূর করার জন্য ১২
টি ভালো ব্র্যান্ডের ক্রিমের নাম জেনেছি। এবার যারা তাদের ব্রণের দাগ
দূর করার জন্য ব্রণের দাগ দূর করার ক্রিম এর নাম সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য
নিম্নে কতগুলো ভালো ব্র্যান্ডের ব্রণের দাগ দূর করার ক্রিম এর নাম দেওয়া
রয়েছে।

  • নরম্যাকনে একনি স্পট ট্রিটমেন্ট (Normacne Acne Spot Treatment)
  • ম্যানকাইন্ড অ্যাকনেস্টার রিমুভাল জেল (Mankind Acnestar removal gel)
  • ক্লিনিক অ্যাকনি স্যুলিশন স্পট হিলিং জেল (Cleaning Acne Solution Spot Healing
    Gel)
  • দ্যা রিচফিল অ্যান্টি ব্লেমিস ক্রিম ( The RichFeel Anti Blemish Cream)
  • নোমার্কস ক্রিম (Nomarks Cream)
  • হিমালয় ক্লারিনা অ্যান্টি-অ্যাকনি ক্রিম (Himalaya Clarina Anti Acne Cream)
  • ফেয়ার এন্ড লাভলী অ্যান্টি মার্কস ফেয়ারনেস ক্রিম ( Fair & Lovely Anti
    Marks Fairness Cream)

৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় – ব্রণের কালো দাগ দূর করার উপায়ঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আমরা আমাদের আজকের পোস্টে ব্রণ কেন হয়, ৭ দিনে ব্রণ দূর
করার উপায়, ব্রণের কালো দাগ দূর করার উপায়, ব্রণের গর্ত দূর করার
উপায়, ব্রণ দূর করার ক্রিম এবং ব্রণের দাগ দূর করার ক্রিম সম্পর্কে
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনি আমাদের এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে
উপকৃত হয়েছেন। আপনি যদি পরবর্তীতেও এরকম নতুন নতুন তথ্য জানতে এবং পড়তে
চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ভালো থাকবেন, সুস্থ
থাকবেন। ধন্যবাদ।