রাতে ঘুম আসে না কেন – রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়
আপনি কি রাতে ঘুম আসে না কেন এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত? যদি চিন্তিত হয়ে
থাকেন তাহলে আমাদের এই পোস্টটি আপনার জন্যই। কেননা এই পোস্টের মধ্যে আমরা রাতে
ঘুম আসে না কেন এবং রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায় কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করেছি। সুতরাং, আর দেরি না করে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার
মাধ্যমে রাতে ঘুম আসে না কেন এবং রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায় সম্পর্কে
ভালোভাবে জেনে নিন।
এছাড়াও আমাদের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব ভালোভাবে পড়ার
মাধ্যমে আপনি আরও যেসব বিষয়ে জানতে পারবেন সেগুলো হলো- কি খেলে রাতে
ঘুম আসে না, রাতে ঘুমানোর দোয়া, রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর দোয়া, রাতে
ঘুম ভাঙলে দোয়া ইত্যাদি বিষয়াবলী সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ রাতে ঘুম আসে না কেন – রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর
উপায়
- রাতে ঘুম আসে না কেন
- কি খেলে রাতে ঘুম আসে না
- রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়
- রাতে ঘুমানোর দোয়া । রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর দোয়া
- রাতে ঘুম ভাঙলে দোয়া
- রাতে ঘুম আসে না কেন – রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়ঃ শেষ কথা
রাতে ঘুম আসে না কেন
আমাদের সবার জীবনের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সময় ঘুমের মাধ্যমেই কেটে
যায়। কিন্তু তার সত্বেও এর কিছু ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। অর্থাৎ,
কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকের রাতে ঘুম আসে না।তাই এইসব মানুষ যাদের
রাতে ঘুম আসে না তাদের মনের মধ্যে অনবরত একটি প্রশ্ন জাগ্রত হতে দেখা যায় যে,
রাতে ঘুম আসে না কেন? আর এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য তারা ইন্টারনেটের বিভিন্ন
প্লাটফর্মে সার্চ করে থাকে। সেজন্যই এই সকল মানুষদের উদ্দেশ্যে আজকে আমরা
রাতে ঘুম আসে না কেন এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
আরো পড়ুনঃ মসজিদে দান করার হাদিস – মসজিদে দান করার ফজিলত
অর্থাৎ, আজ আমাদের এই পোস্টের প্রধান আলোচ্য বিষয় হলো রাতে ঘুম আসে না কেন।
তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি আলোচনায় যাওয়া যাক। রাতে ঘুম না আসার
কারণ গুলোর মধ্যে আমরা কয়েকটি কারণকে দায়ী করতে পারি। এর মধ্যে রয়েছে-
কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ, ব্যায়াম বা শারীরিক কসরত এর অভাব, ইন্টারনেট অথবা
মোবাইলে অতিরিক্ত আসক্তি, অনিদ্রা রোগ বা ইনসমনিয়ায় ভোগা। নিম্নে এই
বিষয়গুলোকে বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যা করা হলোঃ
১। কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ
যেকোনো কর্মস্থলে যদি কাজের প্রচুর চাপ থাকে তখন মানুষের মস্তিষ্কের উপর
স্বাভাবিকভাবেই এক ধরনের প্রভাব পড়ে থাকে। এর ফলে মানুষের স্বাভাবিক
জীবন-যাপনে যেমন ব্যাঘাত ঘটে তেমনি রাতে ঘুম আসার ক্ষেত্রেও বিঘ্ন সৃষ্টি
হয়। আর এইভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে একজন ব্যক্তি
দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতায় ভুগতে থাকে।
২। ব্যায়াম বা শারীরিক কসরত এর অভাব
অনেকেই মনে করে থাকে সারাদিন বিভিন্ন ধরনের অফিসিয়াল কাজকর্ম এরপর আবার কি
ব্যায়াম বা শারীরিক কসরত এর প্রয়োজন রয়েছে! এর উত্তরে আমরা বলব হ্যাঁ
অবশ্যই ব্যায়াম বা শারীরিক কসরত এর প্রয়োজন রয়েছে। কেননা বেশিরভাগ অফিস
গুলোতে আমাদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয়। অর্থাৎ, এখানে শারীরিক কসরত বা
শারীরিক পরিশ্রম তেমন একটা হয়না না। যার কারণে সারাদিনের দৈহিক
পরিশ্রমের ফলে যে ধরনের ক্লান্তি ভাব আসা দরকার সেটা আসে না। আর এটা হলো
রাতে ঘুম না আসার পেছনের একটি অন্যতম কারণ।
৩। ইন্টারনেট অথবা মোবাইলের অতিরিক্ত আসক্তি
মূলত মোবাইল ফোন থেকে উৎপন্ন নীল রঙের আলো আমাদের ঘুম আসার জন্য যে হরমোনের
প্রয়োজন তা উৎপন্ন হতে বাধা দেয়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে মোবাইল, ল্যাপটপ
কিংবা বিনোদনমূলক যে সকল যন্ত্রণা রয়েছে তা বিছানা থেকে দূরে রাখা
উচিত। এতে ঘুম আসার জন্য যে পরিবেশ প্রয়োজন তা তৈরি হয়। এর জন্য
সুগন্ধি মোমবাতির ব্যবহার করলে এক ধরনের শান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং
সহজেই ঘুমের পরিবেশ তৈরি হতে পারে।
৪। অনিদ্রা রোগ বা ইনসমনিয়ায় ভোগা
মূলত রাতে ঘুম না আসা বা অনিদ্রা এক ধরনের রোগ যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের
ভাষায় ইনসমনিয়া বলা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে রোগীদের দিনের বেলায় ঘুম ঘুম
ভাব, কম শক্তিশালী মাংসপেশী, খিটখিটে মেজাজ এবং দুর্বল শরীরের অধিকারী হতে
দেখা যায়। তবে এই রোগ উপযুক্ত চিকিৎসা এবং মেডিটেশনের মাধ্যমে সারিয়ে
তোলা সম্ভব।
প্রিয় পাঠক আশা করছি আমাদের উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনি আপনার মনে জাগ্রত
হওয়া রাতে ঘুম আসে না কেন এই প্রশ্নটির সঠিক ব্যাখ্যা সহ উত্তর জানতে সক্ষম
হয়েছেন। এবার তাহলে চলুন আমরা আমাদের আলোচনার পরবর্তী অংশে কি খেলে রাতে
ঘুম আসে না সেই ব্যাপারে জেনে নেই।
কি খেলে রাতে ঘুম আসে না
খাবার আমাদের শরীরের অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করে। ঠিক তেমনিভাবে খাবার আমাদের ঘুম
আসা এবং না আসার উপরেও অনেকটা প্রভাব রাখে। চলুন এখন আমরা বিস্তারিত জেনে নেই কি
খেলে রাতে ঘুম আসে না।
সাধারণত যে সকল খাবার খেলে রাতে ঘুম আসে না তাদেরকে পুষ্টি বিজ্ঞানের ভাষায়
অনিদ্রার খাবার বলা হয়।যেমনঃ অতিরিক্ত মিষ্টি বা চিনিযুক্ত খাবার, টক
জাতীয় খাবার, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় খাবার, ডার্ক চকলেট, কফি
ইত্যাদি।
১। অতিরিক্ত মিষ্টি বা চিনিযুক্ত খাবার
সাধারণত মিষ্টি বা চিনিযুক্ত খাবার ঘুমের আগে খেলে শরীরে অপ্রয়োজনীয় কর্মশক্তি
উৎপাদন হয়। যার ফলে আমাদের হৃদপিন্ডের স্পন্দন বেড়ে যায়। আর এই
অবস্থায় আমরা যদি ঘুমানোর চেষ্টা করি তখন ঘুম আসে না।
২। টক জাতীয় খাবার
সাধারণত রাতে ঘুমানোর আগে টক জাতীয় খাবার বা যেসব খাবারে ভিটামিন “সি” রয়েছে
সেই ধরনের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। কেননা এই ধরনের
খাবার আমাদের রাতের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
৩। অ্যালকোহল
পৃথিবীর অনেক জায়গায় গবেষণাতে দেখা গেছে অ্যালকোহল পান করলে বা গ্রহণ করলে
রাতের প্রথম অংশে ভালো ঘুম হলেও শেষ অংশে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে এবং অস্থিরতা কাজ
করে। তাই যারা প্রশ্ন করে থাকেন যে, কি খেলে রাতে ঘুম আসে
না? তাদের প্রশ্নের জবাব হিসেবে রাতে অ্যালকোহল পান করার বিষয়টিকে উল্লেখ
করা যেতে পারে।
৪। অতিরিক্ত ঝাল জাতীয় খাবার
আমাদের পাকস্থলীতে বা অন্ত্রে অস্বস্তির সৃষ্টি করে অতিরিক্ত ঝাল
জাতীয় খাবার। আর তখন পেটে অস্বস্তি নিয়ে সাধারণত ঘুম আসেনা। তাই ঝাল
জাতীয় খাবার খাওয়া রাতে ঘুম না আসার অন্যতম একটি কারণ।
৫। ডার্ক চকলেট
সাধারণত ডার্ক চকোলেটের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে “ক্যাফেইন” জাতীয় উপাদান
থাকে। আর ক্যাফেইন জাতীয় উপাদান আমাদের ঘুম আসতে দেয় না। এছাড়াও
ডার্ক চকোলেটে “থিওব্রোমাইন” জাতীয় উপাদান থাকে। আর এই উপাদানগুলো রাতের বেলায় আমাদের ঘুম আসতে বাধা
দেয়।
৬। কফি
কফি হচ্ছে ক্যাফেইনের অন্যতম উৎস। আর ক্যাফেইন আমাদের শরীরের ঘুমকে তাড়িয়ে
দেয়।এছাড়াও চা এবং কফি আমাদের শরীরের মূত্র উৎপাদনের পরিমাণকে বাড়িয়ে
দেয়। এর ফলে বারবার টয়লেটে যাওয়ার ব্যাপার অনুভূত হয় এবং রাতে ঘুম আসতে
পারে না।
সুতরাং, আপনি যদি চান যে রাতের বেলায় আপনার তাড়াতাড়ি ঘুম আসুক তাহলে অবশ্যই
আপনাকে উপরিউক্ত খাবারগুলো রাতে ঘুমানোর আগে খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
আমরা এতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের পোস্টের মধ্যে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে
আলোচনা করলাম। এর একটি হচ্ছে রাতে ঘুম আসে না কেন আর আরেকটি হচ্ছে কি খেলে রাতে
ঘুম আসে না। এখন উপরের দুইটি বিষয় থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য রাতে
তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায় কি সেই বিষয়ে আমরা নিম্নের অংশে সবিস্তারে আলোচনা
করব।
রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়
সাধারণত আমাদের শরীর যদি ক্লান্ত থাকে সেক্ষেত্রে বিছানায় শোয়ার সাথে সাথে
আমাদের ঘুম চলে আসে। এছাড়াও দিনের বেলা যথেষ্ট পরিমাণে ব্যায়াম এবং শারীরিক
কসরত করা প্রয়োজন। এতে করে শরীরে ক্লান্তি ভাব চলে আসে এবং রাতে দ্রুত ঘুম
আসে। পাশাপাশি রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর জন্য ক্যাফেইন জাতীয় খাবার,
অতিরিক্ত ঝাল, অতিরিক্ত মিষ্টি, চা-কফি এবং অ্যালকোহল জাতীয় খাবার
থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হয়।
এছাড়াও বিছানায় যাওয়ার আগে এমন কিছু একটা করুন যা আপনার দেহ এবং মনকে চাপমুক্ত
রাখতে পারে। এর জন্য আপনি হালকা গরম পানিতে গোসল, মেডিটেশন, ডায়েরি
লেখা, অল্প আলোতে বই পড়া ইত্যাদি কাজ গুলো করতে পারেন। এগুলোই
মূলত রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়।
আরো পড়ুনঃ হঠাৎ হঠাৎ পেট ব্যথার কারণ – পেটে ব্যাথা হলে করণীয়
এর পাশাপাশি রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায় হিসেবে আপনি প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট
সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুললে সেটা আপনাকে অনেক কার্যকারী ফলাফল দিতে
সক্ষম। কেননা প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো আমাদের দেহঘড়ির একটা
অংশ। যার উপর নির্ভর করে আমাদের শরীরের সমস্ত কার্যক্রম পরিচালিত
হয়। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করা
উচিত।
রাতে ঘুমানোর দোয়া । রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর দোয়া
আমরা যারা মুসলমান রয়েছি অর্থাৎ, আমাদের মধ্যে যারা ইসলাম ধর্মের
অনুসারী তাদের জন্য রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায় হিসেবে রাতে ঘুমানোর
দোয়া কিংবা রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর দোয়া রয়েছে। আর এখন আমরা আমাদের আলোচনার
এই অংশে রাতে ঘুমানোর দোয়া বা রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর দোয়া নিয়ে বিস্তারিত
আলোচনা করব।
হযরত হুযাইফা (রাঃ) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রাতের বেলায় নিজের বিছানায় শোবার সময় নিজের হাত গালের নিচে রাখতেন এবং বলতেন-
” আললাহুমমা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া” [ اَللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا
] অর্থাৎঃ
“হে আল্লাহ! আপনারই নামে মরে যায় আবার আপনারই নামে জীবন লাভ
করি”। এছাড়াও আমাদের নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিছু
আমল রয়েছে। আর এই আমলগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে বিছানা ঝেড়ে নেওয়া।
- ডান কাঁধের উপর ভর করে ঘুমানো।
- এবং উপরোক্ত দোয়াটি পাঠ করা।
একদা এক সময় আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এক ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে
বললেন, ” হে অমুক, যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাবে তখন নামাজের ন্যয় অযু করবে।
তারপর তোমার ডান পার্শ্বের ওপরে শুবে এবং উক্ত দোয়া পড়বে। তারপর রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যদি তুমি সেই রাতে মৃত্যু বরণ কর, তবে
তুমি ইসলামের ওপর মৃত্যু বরণ করবে আর যদি তুমি ভোরে ওঠ, তবে তুমি কল্যাণের সঙ্গে
ওঠবে।”
এছাড়াও ঘুমের ব্যাপারে আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর আরো কিছু
নির্দেশনা রয়েছে। নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন ” যে
ব্যক্তি রাতে ঘুমানোর সময় সূরা বাক্বারার শেষ দু’টি আয়াত তেলাওয়াত করবে, তার জন্য
তা যথেষ্ট হবে।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
আমরা ইতিমধ্যেই রাতে ঘুমানোর দোয়া বা রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর দোয়া সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনেছি। আর আমরা যদি রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চাই তবে সেক্ষেত্রে আমাদের
উচিত হবে প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে উপরের আমলগুলোকে যথাযথভাবে
পালন করা। মহান আল্লাহ পাক আমাদেরকে সেই তৌফিক দান করুক(আমিন)।
রাতে ঘুম ভাঙলে দোয়া
অনেক সময় আমাদের রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যেতে পারে। এখন রাতে ঘুম ভাঙলে দোয়া
কি? এছাড়াও আমাদের মনে আরও প্রশ্ন আসতে পারে ঘুম ভাঙার পর পুনরায় ঘুমাতে গেলে
আমাদের করণীয় কি? এই বিষয়ে আমাদের নবী (সাঃ) আমাদেরকে কি বলেছেন চলুন আমরা
এবার সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
কোন কারণে যদি হঠাৎ করে আমাদের রাতে ঘুম ভেঙে যায় তবে সেক্ষেত্রে পুনঃরায়
ঘুমাতে যাবার আগে তিনবার বিছানা ঝেড়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। হযরত আবু
হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন আমি নবী করীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, “তোমাদের কেউ তার বিছানা (ঘুম)
থেকে উঠার পর আবার বিছানায় (ঘুমানোর জন্য) ফিরে আসলে, সে যেন তার লুঙ্গীর
নিম্নাংশ দিয়ে বিছানাটি তিনবার পরিষ্কার করে নেয়। কারণ সে জানে না, তার
অনুপস্থিতিতে তাতে (ময়লা বা ক্ষতিকর কিছু) কি পতিত হয়েছে ।”
এবং সে যখন শুয়ে যাবে তখন যেন সে বলে,
” بِاسْمِكَ رَبِّي وَضَعْتُ جَنْبِي وَبِكَ أَرْفَعُهُ فَإِنْ أَمْسَكْتَ
نَفْسِي فَارْحَمْهَا وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ
عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ ”
উচ্চারণঃ
“বিসমিকা রাব্বি ওয়াদাতু ঝাম্বি ওয়াবিকা আরফাউহু ফাইন আমসাকতা নাফসি ফারহামহা
ওয়া ইন আরসালতাহা ফাহফাজহা বিমা তাহফাজ বিহি ইবাদাকাস সালিহিনা।”
আরো পড়ুনঃ নাকের পলিপাস অপারেশন খরচ – বিনা অপারেশনে নাকের পলিপাস চিকিৎসা
অর্থাৎ,
“হে আমার প্রতিপালক! তোমার নামে বিছানায় শয়ন করলাম এবং আবার তোমার নামেই জেগে
ওঠবো। যদি তুমি আমার জান (জীবন) রেখে দাও তবে তার প্রতি দয়া কর, আর যদি তাকে
ছেড়ে দাও (মৃত্যু দান কর) তবে তা সেভাবে প্রতিরক্ষা কর যেভাবে তুমি তোমার নেক
বান্দাদের প্রতিরক্ষা কর।”
অন্য আরেকটি বর্ণনায় এসেছে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, “‘তোমাদের
কেউ যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে, তখন সে যেন বলে-
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي عَافَانِي فِي جَسَدِي وَرَدَّ عَلَىَّ رُوحِي
وَأَذِنَ لِي بِذِكْرِهِ”
“
উচ্চারণঃ “আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আফানি ফি ঝাসাদি ওয়া রাদ্দা আলাইয়্যা রুহি ওয়া আজিনা
লি বিজিকরিহি।”
রাতে ঘুম আসে না কেন – রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়ঃ শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক আমরা আমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে রাতে ঘুম আসে না কেন, কি খেলে
রাতে ঘুম আসে না, রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়, রাতে ঘুমানোর দোয়া, রাতে
তাড়াতাড়ি ঘুমানোর দোয়া, রাতে ঘুম ভাঙলে দোয়া ইত্যাদি বিষয়াবলী সম্পর্কে
আপনাদেরকে সুস্পষ্ট তথ্য দেওয়ার যথাযথ চেষ্টা করেছি।আশা করছি এই পোস্টটি
পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন।
আর এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনি রাতে ঘুম আসে না কেন বা রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপায়
কি সেই বিষয়ে খুব ভালোভাবে জানতে সক্ষম হয়েছেন। তাহলে আমাদের আজকের আলোচনা
এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং পরবর্তী পোস্টের আপডেট
পাওয়ার জন্য নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন। ধন্যবাদ।