জুমার দিনের ফজিলত ও জুমার দিনের আমল – tahablog

 জুমার দিন বা শুক্রবার দিন সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ একটি দিন।
ইসলামের দৃষ্টিতে পবিত্র জুম্মার দিন এর তাৎপর্য ও মর্যাদা অনেক বেশি। আমরা সবাই
জানি যে জুমার দিনের ফজিলত বেশি এজন্য জুমার দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়।
আমরা যারা জমার দিনের ফজিলত ও জুমার দিনের আমল সম্পর্কে জানিনা তাদের জন্য এই
পোস্ট । জুমার দিনের ফজিলত হাদিসের একাধিক বর্ণনায় উঠে এসেছে।

জুমার দিনের ফজিলত ও জুমার দিনের আমল - tahablog

পবিত্র জুমার দিন মুসলিম উম্মাহর ইবাদত বন্দেগীর দিন । জুমার দিনের ফজিলত অনেক
বেশি আসুন তাহলে পুরো পোস্ট জুড়ে আমরা জেনে নেই জুমার দিনের ফজিলত ও জুমার
দিনের আমল সম্পর্কে।

জুমার দিনের গুরুত্ব

জুমার দিনের গুরুত্ব এতটাই বেশি যে , রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, সূর্য ওঠা দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম । জুমার দিন দিন আদম আলাই
সাল্লাম কে সৃষ্টি করা হয়েছে জুমার দিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং
জুমার দিনে তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে । 

আরো পড়ুন ঃ মসজিদে দান করার হাদিস – মসজিদে দান করার ফজিলত

অন্য একটি বর্ণনায় উঠে এসেছে জুমার দিনেই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। জুমার গুরুত্ব
আল্লাহতালার কাছে এত বেশি প্রিয় যে , আল কুরআনে ( জুমা ) নামে একটি সূরা নাযিল
করা হয়েছে। আল্লাহতালা আল কোরআন এ এরশাদ করেন , হে মুমিনগণ জুমার দিন যখন
নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে মসজিদে এগিয়ে যাও এবং কেনা
বেচা যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও।  এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর , যদি তোমরা
জানতে ।( সূরা জুমা ০৯)

জুমার দিন মুসলিম উম্মতের জন্য উপহার

জুমার দিনকে গুরুত্ব দিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আমরা
সর্বশেষ উম্মত কিন্তু কিয়ামতের দিন আমাদের সম্মান হবে অন্য উম্মত গুলোর চেয়ে
বেশি। জুমার দিন আমাদের জন্য একটি বিশেষ এবং শ্রেষ্ঠ উপহার কারণ অন্যান্য জাতির
মানুষেরা জুমার দিনের ফজিলত এবং জুমার দিনের আমল থেকে বঞ্চিত।

জুমার দিন কোরবানির সোয়াব পাওয়ার দিন

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন জুমার দিনে ফেরেশতাগণ বিশেষ
রেজিস্টার নিয়ে মসজিদের প্রতিটি দরজায় দাঁড়িয়ে যান এবং মসজিদে প্রবেশকারী
মুসলিমদের নাম ধারাবাহিকভাবে লিখতে থাকেন ।এরপর যখন ইমাম খুতবা শুরু করে তখন তারা
রেজিস্টার বন্ধ করে খুতবা শুনতে থাকেন। 

আরো পড়ুন ঃ হযরত ফাতেমা রাঃ এর জীবনী

যে সবার আগে মসজিদে প্রবেশ করে সে একটি উট কোরবানির সোয়াব লাভ করে , যে দুই
নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি গরু আল্লাহর রাস্তায় কুরবানী দেওয়ার সব লাভ করে , যে
তিন নম্বরে প্রবেশ করে সে দুম্বা কুরবানী করার সব লাভ করে , যে চার নম্বরে প্রবেশ
করে সে একটি মুরগি দান করার সুয়াব  লাভ করে , আর যে পাঁচ নাম্বারে প্রবেশ
করে সে একটি ডিম আল্লাহর রাস্তায় দান করার সব পায়।
( বুখারে মুসলিম মুসনাদে শাফি)

বান্দার গুনাহ মাফের দিন

হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি গোসল করে জুমার নামাজে
এলো এবং দুইরা এবং সুন্নত নামাজ আদায় করল এরপর ইমামের খুতবা মনোযোগ সহকারে
শ্রবণ করলে এবং ইমামের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করল সে তার দুই জুমার মধ্যবর্তী
দ্বীন সমূহ এবং আরো তিন দিন মোট ১০ দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়

জুমার দিন দোয়া কবুলের দিন

জুমার দিনের ফজিলতের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো এই দিনের এমন একটি সময় রয়েছে
যখন বান্দা দোয়া করলে আল্লাহ তা’আলা তা কবুল করে নেয় । একাধিক বর্ণনা এসেছে
হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন , “জুমার দিনের যে মুহূর্তে (দোয়া কবুল হওয়ার) আশা করা যায়
তা আসরের পর থেকে সূর্যাস্তের মধ্যে তালাশ কর” । 

 ( তিরমিজি ,মুসলিম, মিশকাত )

জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার সময়

এ বিষয়ে নানা মতামত পাওয়া যায় তবে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য একটি মত হল জুমার দিনে
আসরের নামাজ এরপর থেকে শুরু করে মাগরিবের নামাজের আগ পর্যন্ত বা সূর্যাস্তের
পূর্ব পর্যন্ত এই সময়টাতে দোয়া করলে আল্লাহর কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়।

জুমা না পড়ার পরিণতি

হযরত আব্দুল্লাহ ওমর ও আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন তারা উভয়ে
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মেম্বারের  দাঁড়িয়ে বলতে
শুনেছেন যার জুমার নামাজ ত্যাগ করে তাদেরকে এই অভ্যাস বর্জন করতে হবে অথবা আল্লাহ
তাদের অন্তরে সিলমোহর মেরে দেবে । এরপর তারা গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
সুতরাং সুতরাং আল্লাহর বান্দা হিসেবে আমাদের উচিত জুমার দিন আগে মসজিদে যাওয়া
এবং দিনটিতে যেসব ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে সেগুলোর উপর আমল আনা।