হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল – হযরত ওমর রাঃ এর মৃত্যু
হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলের আলোচনা করা হবে। বিশেষ করে যুবকেরা হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল সম্পর্কে বেশি জানতে চায়। আপনারা যারা আমাদের এয়ারটিকেল পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আপনাকে কষ্ট করে সম্পূর্ণ আতিকের মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
তাহলে চলুন আর দেরি না করে ঝটপট করে হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল – হযরত ওমর রাঃ এর মৃত্যু
- ভূমিকা
- হযরত ওমর রাঃ এর প্রাথমিক জীবনী
- হযরত ওমর রাঃ এর ইসলাম গ্রহণ
- হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল
- হযরত ওমর রাঃ এর প্রশাসনিক সংস্কার
- হযরত ওমর রাঃ এর মৃত্যু
- আমাদের শেষ কথা
ভূমিকাঃ হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল – হযরত ওমর রাঃ এর মৃত্যু
আমরা জানি যে ইসলামের একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব হলেন হযরত ওমর রাঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল সম্পর্কে জানতে চাই। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা হযরত ওমর রাঃ এর প্রাথমিক জীবনী, হযরত ওমর ফারুক রাঃ এর জীবনী, হযরত ওমর রাঃ এর ইসলাম গ্রহণ, হযরত ওমর রাঃ প্রশাসনিক সংস্কার, হযরত ওমর রাঃ এর মৃত্যু সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে।
হযরত ওমর রাঃ এর প্রাথমিক জীবনী – হযরত ওমর ফারুক রাঃ এর জীবনী
হযরত ওমর রাঃ এর প্রাথমিক জীবনী সম্পর্কে আজকেরে আর্টিকেল আলোচনা করা হবে। আমাদের আলোচনার মূল বিষয় হলো হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল। তার আগে আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর একজন গুরুত্বপূর্ণ সাহাবী হযরত ওমর ফারুক রাঃ এর জীবনী সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।
জন্মঃ আমরা জানি যে হযরত ওমর রাঃ ইসলামের একজন বড় সাহাবী ছিলেন। তিনি প্রথমে ইসলামের একজন শত্রু ছিলেন এরপরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পরে আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাম এর সব থেকে কাছের মানুষ হয়ে যান। হযরত ওমর রাঃ জন্মগ্রহণ করেন ৫৮৩ / ৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে।
হযরত ওমর রাঃ ইসলাম ধর্ম গ্রহণঃ হযরত ওমর রাঃ প্রথমে ইসলামের বিরোধী ছিলেন। মক্কায় নতুন ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী দের ওপর তিনি নির্যাতন করতেন। তিনি ইসলামী আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন। এরপরে ইসলামের প্রভাবে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। একদিন ভগনী ও তার ভগ্নিপতি কে ইসলাম গ্রহণ এর জন্য নির্দয়ভাবে শাসন করতে গিয়ে নিজেই ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর নিকট গিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
ইসলামের সেবাঃ হযরত ওমর রাঃ ছিলেন ইসলাম ও মুসলমানদের চরম বিরোধী। তিনি মুসলমানদের হয়ে সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছিলেন। তিনি ইসলামের সেবায় তার জীবনকে উৎসর্গ করে দিতেন। ওমর ফারুক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পূর্বে ইসলাম তেমন শক্তিশালী ছিল না কিন্তু হযরত ওমর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পরে মুসলমানদের শক্তি বহুগুণে বেড়ে গিয়েছিল।
আরো পডুন ঃ মসজিদে দান করার হাদিস – মসজিদে দান করার ফজিলত
কারণ হযরত ওমর রাঃ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার আগে প্রকাশ্য ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে পারতেন না মুসলমানেরা কিন্তু তিনি ইসলামে আসার পর থেকে তিনি প্রকাশ্য ইসলাম প্রচার করতেন। তিনি দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে ইসলামের বাণী পৌঁছে দিয়েছিলেন। তিনি একজন ইসলামের আদর্শ রাষ্ট্রীয় শাসক ছিলেন। যার থেকে আমাদের অবশ্যই শিক্ষা নেওয়া উচিত।
হযরত ওমর রাঃ খলিফা নির্বাচনঃ হযরত আবু বক্কর রাঃ এর ইন্তেকালের পর হযরত ওমর রাঃ খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি দীর্ঘ ১০ বছর ৬ মাস ধরে খেলাফতের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার শাসনামলে ইসলামের বিস্তৃতি ঘটে ছিল অনেক। হযরত ওমর রাঃ এর আমলে পারস্য সিরিয়া মিশর ফিলিস্তিন বিজিত হয়।
হযরত ওমর রাঃ শাসনঃ হযরত ওমর রাঃ একজন আদর্শ শাসক ছিলেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর পর হযরত ওমর রাঃ শাসনামলের তুলনা হয়না। তিনি ছিলেন ইসলামের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক। হযরত ওমর রাঃ এর আমলে সর্বপ্রথম জেলখানা স্থাপিত হয়েছিল। তিনি কর্মচারীদের বেতন নীতি প্রবর্তন করেন। তিনি প্রথম গোয়েন্দা বিভাগ চালু করেন, হযরত ওমর রাঃ এর আমলে আদমশুমারি চালু হয়।
হযরত ওমর রাঃ এর ইসলাম গ্রহণ
হযরত ওমর রাঃ এর ইসলাম গ্রহণ এর পেছনে একটি সুন্দর ঘটনা রয়েছে যা আপনার মনকে নাড়া দেবে। একজন মুসলমান হিসেবে আপনার অবশ্যই হযরত ওমর রাঃ এর ইসলাম গ্রহণ এর পেছনে ঘটনাটিকে থাকা উচিত। তো চলুন হযরত ওমর রাঃ এর ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
হযরত ওমর রাঃ ইসলামের একজন শত্রু ছিলেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার আগে তিনি কখনও ইসলামকে সহ্য করতে পারতেন না। ইসলামের বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলন করেছিলেন। তিনি একা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম কে হত্যা করতে যাচ্ছিলেন তখন তিনি তার বোন এবং ভগ্নিপতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে এটি শুনতে পান। এ কথা শোনার পর তিনি গতি পরিবর্তন করে তার বোনের বাড়ীর দিকে চলে যান।
বোনের ঘরে ঢুকে তিনি তার ভগ্নিপতি কে মারধর শুরু করেন। এরপর তিনি তার বোনকে মারতে থাকেন। তার কারণে তার বোন এবং ভগ্নিপতির শরীর দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। তা দেখে হযরত ওমর রাঃ এর মনে একটু দয়া হয়। এরপরে হযরত ওমর রাঃ জিজ্ঞেস করলেন তোমরা কি পড়ছিলে? তখন তার বোন জবাব দিলেন কোরআন পড়ছিলাম।
আরো পডুন ঃ নবী (সাঃ) কতবার হজ্জ করেছেন
তখন হযরত ওমর রাঃ বললেন আমাকেও দেখাও তখন তার বোন বললেন তুমি অপবিত্র। অপবিত্র অবস্থায় কোরআন শরীফ স্পর্শ করা যায় না। এর পরে তিনি পবিত্র হয়ে এলেন এবং কোরআন শরীফের আয়াত গুলো পড়তে থাকেন। তখন আল্লাহ তাআলার বাণী পড়ে তার মনের ভেতরে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। তিনি তখন বললেন নবীজি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম কোথায়? আমি তার কাছে গিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করব।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পরে হযরত ওমর রাঃ কাবার সামনে প্রকাশ্যে নামাজ আদায় করেন। এবং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম হযরত ওমর রাঃ এর উপর খুশি হয়ে তার উপাধি দিলেন ফারুক যার অর্থ হলো সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।
হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল
হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল ছিল মনে রাখার মত। এখনকার কোন শাসকদের মাঝে দেখা যায় না। আমরা জানি যে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ ছিলেন। আপনারা যারা আমাদের এই আর্টিকেল পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে চলুন হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
যখন হযরত আবু বক্কর রাঃ খিলাফতের প্রধান ছিলেন তখন হযরত ওমর রাঃ তার উপদেষ্টা ছিলেন। তার মৃত্যুর পরে হযরত ওমর রাঃ খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর পরে হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমলের তুলনা হয়না। তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক এবং সফলকামী জাতীয় নেতাদের মধ্যে অন্যতম একজন।
- তিনি সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রে সংস্কার সাধন করেন। হযরত ওমর রাঃ এর আমলে সর্বপ্রথম জেলখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়।
- হযরত ওমর রাঃ এর আমলে সর্বপ্রথম গোয়েন্দা বিভাগ চালু করা হয়।
- হযরত ওমর রাঃ চাকরিতে পেনশন প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতা এগুলো চালু করেছিলেন।
- হযরত ওমর রাঃ শাসনকার্যে সফলভাবে চালানোর জন্য তিনি সাম্রাজ্যকে ১৪ টি ভাগে ভাগ করেছিলেন।
- হযরত ওমর রাঃ শাসন আমলে কর্মচারীদের বেতন নীতি প্রবর্তন করেন।
- তিনি রাজ্যের প্রতিটি মানুষকে সমান চোখে দেখতেন। এবং সকলের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতেন। এখানে তার সন্তান অন্যায় করার কারণে কোনো সুবিধা পায়নি। তাকে শাস্তি ভোগ করতে হয়েছিল।
হযরত ওমর রাঃ এর প্রশাসনিক সংস্কার
হযরত ওমর রাঃ এর প্রশাসনিক সংস্কার সম্পর্কে অনেকেই জানতে চায়। ইতিমধ্যে আমরা হযরত ওমর রাঃ সম্পর্কে অনেকগুলো বিষয় জানতে পেরেছি। আপনারা যারা হযরত ওমর রাঃ এর প্রশাসনিক সংস্কার সম্পর্কে জানতে চান তারা অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে চলুন হযরত ওমর রাঃ এর প্রশাসনিক সংস্কার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আরো পডুন ঃ হযরত ফাতেমা রাঃ এর জীবনী
হযরত ওমর রাঃ খিলাফতের ক্ষমতা লাভ করার পরে খিলাফতের সীমানা ব্যাপক বৃদ্ধি করেন। তিনি তার শাসনামলে রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে শুরু করেন। তিনি বেশকিছু প্রশাসনিক সংস্কার সাধন করেন। তিনি প্রশাসনিক গঠন করেন যাতে কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং আমলাতন্ত্র ছিলেন। ৬৩৮ মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববী সংস্কার করেন।
ফিকহের ওমর এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সুন্নিরা তাকে একজন শ্রেষ্ঠ ফকিহ হিসেবে শ্রদ্ধা করে থাকেন। ৬৪১ সালে তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগার হিসেবে বায়তুলমাল গঠন করেন। মুসলমানদের বার্ষিক ভিত্তিতে ভাতা প্রদান করত সেখানে থেকে। নেতা হিসেবে হযরত ওমর রাঃ খুবই সাধারণ জীবনযাপন করতেন।
হযরত ওমর রাঃ এর মৃত্যু
এখন আমরা হযরত ওমর রাঃ এর মৃত্যু সম্পর্কে আলোচনা করব। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা হযরত ওমর রাঃ এর মৃত্যু সম্পর্কে জানতে চাই। আমরা সকলেই জানি যে হযরত ওমর রাঃ ইসলামের একজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ মানুষ ছিলেন। হযরত ওমর রাঃ তিনি ইসলামের জন্য তার নিজের জীবন দিতে রাজি ছিলেন। তো চলুন হযরত ওমর রাঃ এর মৃত্যু সম্পর্কে জেনে নেই।
একদিন মসজিদে নববীতে এশার নামাজে ইমামতি করার সময় আবু লুলু নামক এক কাফের হযরত ওমর রাঃ এর মাথা এবং নাভিতে বিষাক্ত তরবারির আঘাত করেন। এরকম অবস্থায় হযরত ওমর রাঃ তিন দিন অতিবাহিত হয়। জিলহজ মাসের ২৭ তারিখ শনিবার তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আমাদের শেষ কথাঃ হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল – হযরত ওমর রাঃ এর মৃত্যু
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা হযরত ওমর রাঃ এর শাসন আমল, হযরত ওমর রাঃ এর মৃত্যু, হযরত ওমর রাঃ এর প্রশাসনিক সংস্কার সহ আরো অনেকগুলো বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে ইতিমধ্যে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যদি না করে থাকেন তাহলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন ধন্যবাদ।২০৭৯১