দাড়ি গজানোর উপায় – দাড়ি ঘন করার উপায়

বর্তমান সময়ে ছেলেদের মধ্যে অনেকেই দাড়ি গজানোর উপায় এবং দাড়ি ঘন করার উপায়
জানতে চাই। তাই তাদের জন্য আজকে আমরা এই পোস্টের মধ্যে দাড়ি গজানোর উপায়
এবং দাড়ি ঘন করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। সুতরাং, আপনিও যদি দাড়ি গজানোর উপায় এবং দাড়ি ঘন করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে
সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন।

দাড়ি গজানোর উপায় - দাড়ি ঘন করার উপায়

আজকে আমরা আমাদের এই পোস্টের মধ্যে দাড়ি গজানোর পদ্ধতি সম্পর্কিত আলোচনা ব্যতীত
আরও যেসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব সেগুলো হলো- মুখে দাড়ি গজানোর তেল, চাপ
দাড়ি গজানোর উপায়, দাড়ি গজানোর ইসলামিক উপায়, দাড়ি গজানোর দোয়া এবং দাড়ি
গজানোর ঔষধ সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ দাড়ি গজানোর উপায় – দাড়ি ঘন করার উপায় 

দাড়ি গজানোর উপায় – দাড়ি ঘন করার উপায়ঃ ভূমিকা

পুরুষের চেহারার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছে
পুরুষের মুখের দাড়ি। আবার একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের চেহারায় দাড়ি
থাকা অনেক ক্ষেত্রেই অনিবার্য। তাই যাদের প্রাপ্ত বয়স থাকার পরেও চেহারায়
দাড়ি গজাচ্ছে না তাদেরকে প্রতিনিয়ত তাদের বন্ধু-বান্ধব কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের
কাছে উপহাসের পাত্র হতে দেখা যায়। 

অধিকাংশ ছেলেরাই চায় তাদের উপযুক্ত বয়সে চেহারায় দাড়ি গজাবে কিংবা দাড়ি ঘন
হবে।কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছেলেদের শরীরে টেস্টোস্টেরন নামক হরমোনের
ঘাটতির কারণে চেহারায় দাড়ি গজাতে পারে না।যার ফলে অনেক ছেলেরাই তাদের
চেহারায় দাড়ি গজানোর উপায় এবং দাড়ি ঘন করার উপায় সম্পর্কে জানার প্রতি
আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে। আর এই রকম ছেলেদের বা পুরুষদের চেহারায়
দাড়ি গজানোর উপায় কি বা দাড়ি ঘন করার উপায় কি সেই সম্পর্কিত বিস্তারিত
আলোচনা নিয়েই আজকে আমরা আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। 

আরো পড়ুনঃ ব্যায়াম করার পর কি খাওয়া উচিত – ব্যায়াম করার পর খাবার তালিকা

সুতরাং, আপনিও যদি আপনার চেহারায় দাড়ি গজানোর বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত হয়ে
থাকেন তাহলে নিশ্চিন্তে আমাদের এই পোস্টটি পড়া শুরু করুন। আশা রাখি আমাদের
এই পোস্টটি পড়া শেষ করার পর আপনি খুব ভালোভাবে দাড়ি গজানোর উপায় এবং
দাড়ি ঘন করার উপায় সম্পর্কে সবিস্তারে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না
বাড়িয়ে সরাসরি আলোচনা শুরু করা যাক।

দাড়ি গজানোর উপায়

দাড়ি গজানোর উপায় সম্পর্কিত আমাদের আজকের মূল আলোচ্য বিষয়ে আমরা মূলত কতগুলো
প্রাকৃতিক এবং ঘরোয়া উপায়ে দাড়ি গজানোর পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদেরকে অবহিত
করব। কেননা দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য উপায় গুলোর মধ্য থেকে প্রাকৃতিক
এবং ঘরোয়া উপায় সমূহ দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত নিরাপদ এবং সেই
সঙ্গে অত্যন্ত ফলপ্রসূও বটে। আর এই সমস্ত দাড়ি গজানোর উপায় গুলো হলো
নিম্নরূপঃ

প্রোটিন জাতীয় খাবার এবং ভিটামিন জাতীয় খাবার খাওয়া

ছেলেদের চেহারায় দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে তাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায়
প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। কেননা এই সমস্ত
ভিটামিন সমৃদ্ধ এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো ছেলেদের শরীরের মধ্যে নিষ্ক্রিয় হয়ে
যাওয়া “ফলিকলস” সমূহকে পুনরায় উজ্জীবিত করতে সাহায্য করে থাকে। আর এর
ফলশ্রুতিতে ছেলেদের চেহারার মধ্যে যে সমস্ত জায়গায় দাড়ি গজানো বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেই
সমস্ত জায়গার লোমকূপ গুলো থেকে পুনরায় দাঁড়িয়ে গজাতে শুরু করে। 

তাই আপনি আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন সমৃদ্ধ
খাবার যেমন- ডিম, মাছ, মাংস এবং বিভিন্ন দুধ জাতীয় খাবার খাবেন। আর সেই সঙ্গে বিভিন্ন
ভিটামিন সমৃদ্ধ ফলমূল এবং শাক-সবজি খাবেন। বিশেষ করে ভিটামিন “ডি” সমৃদ্ধ এবং
ভিটামিন “বি”-১২ সমৃদ্ধ খাবারগুলো বেশি বেশি খাবেন।

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো

আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে, ছেলেদের চেহারায় দাড়ি না গজানোর অন্যতম একটি কারণ হলো
ছেলেদের শরীরের মধ্যে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ঘাটতি থাকা। আর এই ধরনের
হরমোনের ঘাটতি দেখা দেওয়ার পেছনের একটি অন্যতম কারণ হলো প্রতিদিন পর্যাপ্ত
পরিমাণে না ঘুমানো। তাই আপনি যদি চান যে, আপনার চেহারায় পর্যাপ্ত পরিমাণে দাড়ি গজাক তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। অর্থাৎ, প্রতিদিন আপনাকে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা সময়
ধরে ঘুমাতে হবে।

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমাদের শরীরের মধ্যে থাকা হরমোন
গুলোর ভারসাম্য বজায় থাকে। এছাড়াও নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করার মাধ্যমে
আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ গুলো সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারে। আর সেইসঙ্গে
নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে শরীরের মধ্যে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পায়। তাই দাড়ি
গজানোর উপায় হিসেবে আপনি নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন।

ধূমপান না করা

ধূমপান করার মাধ্যমে চেহারার মধ্যে থাকা দাড়ি গুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঝরতে থাকে। এর পাশাপাশি নতুন করে দাড়ি গজানোর প্রক্রিয়াটিও বাধা প্রাপ্ত হয়। কেননা
ধূমপানের মধ্যে থাকা বিভিন্ন তামাক জাতীয় পদার্থের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন
ধরনের রাসায়নিক পদার্থ। আর এই সমস্ত রাসায়নিক পদার্থ গুলো চেহারার জন্য পুষ্টির চাহিদা
পূরণকারী রক্তনালীর প্রদাহের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করে। তাই চেহারার মধ্যে
পর্যাপ্ত পরিমাণে দাড়ি গজানোর জন্য আপনাকে ধূমপান করা থেকে বিরত থাকতে
হবে।

নিয়মিত মুখ পরিষ্কার করা

মুখ অপরিষ্কার থাকার ফলেও চেহারার মধ্যে দাড়ি গজাতে পারে না। সেজন্য আপনার উচিত
হবে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা অন্তত একবার করে হলেও হালকা কুসুম গরম পানিতে ভালোভাবে
মুখ পরিষ্কার করে নেওয়া। আর এর পাশাপাশি বিভিন্ন ন্যাচারাল ক্লিনজিং উপাদান
ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করা। ন্যাচারাল ক্লিনজিং উপাদানের মধ্যে রয়েছে-   লেবুর রস, দুধ, মধু, চালের গুড়া, বেসন ইত্যাদি।

মানসিকভাবে দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা

চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী মানুষ যখন মানসিকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত
হয়ে পড়ে তখন চেহারার মধ্যে দাড়ি গজানোর প্রবাহ অপেক্ষাকৃত ভাবে কমে
যায়। তাই চেহারায় পর্যাপ্ত পরিমাণে দাড়ি গজাতে হলে আপনাকে অবশ্যই
মানসিকভাবে দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে।

চেহারায় পেঁয়াজের রস ব্যবহার করা

পেঁয়াজের রসের মধ্যে রয়েছে “সালফার” নামক একটি উপাদান যা প্রাকৃতিকভাবে চেহারায় দাড়ি গজাতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও যেসব ছেলেরা তাদের
চেহারার দাড়ি ঘন করতে চায় তারাও তাদের দাড়ি ঘন করার উপায় হিসেবে চেহারায়
পেঁয়াজের রস ব্যবহার করতে পারে।

চেহারায় লেবুর রস এবং দারুচিনি ব্যবহার করা

লেবুর রসের মধ্যে রয়েছে “সাইট্রিক এসিড”, ভিটামিন-“সি”, ক্যালসিয়াম
এবং ফ্ল্যাভোনয়েডস এর মত বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। যেগুলো দাড়ি গজাতে অত্যন্ত
সহায়ক। তাই আপনি সপ্তাহে অন্তত ২ বার দুই চা চামচ লেবুর রসের সঙ্গে এক চা চামচ দারুচিনির গুঁড়া ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে পেস্ট তৈরি করে আপনার চেহারায়
লাগাতে পারেন এবং লাগানোর অন্তত ২০ মিনিট পর ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ
পরিষ্কার করে নিতে পারেন। নিয়মিত এই প্রক্রিয়াটি ফলো করলে আপনি
নিজেই এর ফলাফল লক্ষ্য করতে পারবেন।

আশা করছি এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনি আপনার চেহারায় দাঁড়িয়ে গজানোর পদ্ধতি
সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। এবার তাহলে চলুন মুখে দাড়ি গজানোর
তেল সম্পর্কে আমাদের পরবর্তী আলোচনায় বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

মুখে দাড়ি গজানোর তেল

আমরা আমাদের আলোচনার এই পর্যায়ে এসে মুখের দাড়ি গজানোর তেল হিসেবে আপনাদের
সামনে ২টি অত্যন্ত কার্যকারী তেলের নাম উল্লেখ করব। আপনি যদি
নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে নিয়মিত এই তেল ২টি আপনার চেহারায় ব্যবহার করতে সক্ষম
হন তাহলেই আশা করা যায় যে, আপনার চেহারায় দাড়ি গজানোর সম্ভাবনা অনেকাংশের বৃদ্ধি
পেয়ে যাবে। মুখে দাড়ি গজানোর উক্ত তেল ২টি হলোঃ

নারিকেল তেল

আমরা সাধারণত চুলের যত্ন নিতে নারিকেল তেল প্রায় ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আপনি
কি জানেন নারিকেল তেল হলো একটি ন্যাচারাল ময়শ্চারাইজার। সেজন্যই এটি আমাদের
চুলের যত্ন নিতে অত্যন্ত কার্যকারী। আর সেই সঙ্গে নারিকেল তেল দাড়ি গজানোর
ক্ষেত্রেও অত্যন্ত কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। নারিকেল তেলের মধ্যে
থাকা মশ্চারাইজিং উপাদান আমাদের ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ভেতর থেকে দাড়ি গজাতে
এবং একই সঙ্গে দাড়ি ঘন করতেও সহায়তা করে থাকে। 

আরো পড়ুনঃ মেয়েরা পরকীয়া করে কেন – পরকীয়া নারী চেনার উপায়

এর জন্য আপনি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে মুছে নিয়ে
নারিকেল তেল মুখে লাগিয়ে রাখতে পারেন এবং লাগানোর ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানির
সাহায্যে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে পারেন। এছাড়াও আপনি যদি
নারিকেল তেলের সঙ্গে রোজমেরি তেল মিশিয়ে নিয়ে আপনার মুখে লাগান তাহলে এটা আরো
দ্বিগুণ গতিতে কাজ করতে সক্ষম হবে। 

আর আপনি যদি নারিকেল তেলের সঙ্গে রোজমেরি তেল মিশিয়ে নিয়ে আপনার মুখে লাগাতে
চান তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই নারিকেল তেলের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত বেশি নিবেন এবং অল্প
পরিমাণে রোজমেরি তেল নিয়ে তারপর এই দুইটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে নিবেন।

আমলকির তেল

নারিকেল তেল ন্যায় আমলকির তেলও দাড়ি গজাতে অত্যন্ত কার্যকারী। কেননা আমলকির তেলের মধ্যে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-“সি” জাতীয় উপাদান। আর এই ধরনের ভিটামিন-“সি” জাতীয়
উপাদান ত্বকের মধ্যে থেকে ন্যাচারালি দাড়ি গজাতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে
থাকে। এর জন্য আপনি প্রতিদিন আপনার মুখ ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে
নেওয়ার পর মুখ ভালোভাবে মুছে নিয়ে ২ থেকে ৩ ফোঁটা পরিমাণ আমলকির তেল আপনার
চেহারার দাড়ি গজানোর জায়গাটুকুতে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ সময় ধরে
ম্যাসাজ করে নিবেন।

এরপর এভাবেই আপনার চেহারায় তেল রেখে দিবেন অন্তত ২০ মিনিট পর্যন্ত। আর ২০ মিনিট পার হয়ে যাওয়ার পর আপনি আপনার মুখ যেকোন ক্লিনজারের সাহায্যে খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন।

চাপ দাড়ি গজানোর উপায়

আজ-কালকার দিনে চাপ দাড়ি রাখা মূলত ছেলেদের জন্য একটি আধুনিক ফ্যাশন। যার
ফলে অনেক ছেলেরাই চাপ দাড়ি রাখতে চাই। কিন্তু শুধু চাপ দাড়ি রাখার ইচ্ছা
পোষণ করলেই হবে না। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই চাপ দাড়ি গজানোর উপায় সম্পর্কে
জানতে হবে। মূলত দাড়ি গজানোর উপায় এবং চাপ দাড়ি গজানোর উপায় এর মধ্যে কোন
পার্থক্য নেই। তাই আপনি যদি আমাদের এই পোস্টের উপরিক্ত আলোচনায় বর্ণিত দাড়ি গজানোর
উপায় সমূহ ভালোভাবে ফলো করতে পারেন তাহলেই আশা করা যায় যে, আপনি আপনার চেহারায়
চাপ দাড়ি পেয়ে যাবেন। 

তবে চাপ দাড়ি গজানোর উপায় হিসেবে আমরা আপনার চেহারায় পেঁয়াজের রস লাগানোর
উপায়টিকে কাজে লাগানোর প্রতি আপনাকে একটু বেশি গুরুত্ব আরোপ
করব। কেননা দাড়ি গজানোর উপায় হিসেবে এই পোস্টের মধ্যে বর্ণিত উপরিউক্ত
অন্যান্য উপায় সমূহের মধ্যে চাপ দাড়ি গজানোর উপায় হিসেবে অপেক্ষাকৃত বেশি ফলপ্রসূ একটি উপায় হলো মুখে নিয়মিত পেঁয়াজের রস লাগানো। আর এর পাশাপাশি আপনি
আপনার চেহারায় দাড়ি গজানোর অংশটুকুতে নারিকেল তেল এবং আমলকির তেলও ব্যবহার করতে
পারেন।

দাড়ি ঘন করার উপায় 

পুরুষদের মধ্যে এমন পুরুষ খুব কমই দেখতে পাওয়া যায় যারা কিনা তাদের
চেহারায় মুখ ভর্তি দাড়ি পছন্দ করেন না। কেননা মুখ ভর্তি দাড়িতে ছেলেদেরকে
দেখতে অপেক্ষাকৃত বেশি হ্যান্ডসাম মনে হয় এবং চেহারায় দাড়ি থাকার কারণে চেহারার
সৌন্দর্যকে দ্বিগুণ হয়ে যায়। তাইতো অধিকাংশ ছেলেরাই চেহারায় ঘন দাড়ি
রাখতে পছন্দ করে। কিন্তু পছন্দ করলেই যে চেহারায় ঘন দাড়ি গজাবে বিষয়টা মোটেও
এমন নয়। 

তবে যাদের চেহারার দাড়ি অপেক্ষাকৃত কম ঘন তারা চাইলে কিছু কার্যকারী দাড়ি ঘন
করার উপায় সমূহকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই তাদের দাড়ি ঘন করে তুলতে
পারে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক দাড়ি ঘন করার উপায় সমূহ কি কি।

অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা

দাড়ি ঘন করার ক্ষেত্রে অ্যালোভেরা জেল হলো অন্যতম একটি প্রাকৃতিক ঔষধ। কেননা অ্যালোভেরা জেল চেহারার দারি গজানোর অংশে নিয়মিত ব্যবহার করার মাধ্যমে ত্বকের সেই অংশটুকু প্রাকৃতিকভাবেই ময়শ্চারাইজড হয়ে যায়, দাড়ি গজাতে সাহায্য করে এবং একই সঙ্গে
দাড়ির ঘনত্বও বৃদ্ধি করত সহায়তা করে থাকে। সেজন্য আপনি চাইলে প্রতিদিন অ্যালোভেরা জেল আপনার চেহারার দাড়ি গজানোর অংশটুকুতে ব্যবহার করার মাধ্যমে
কার্যকারী ফলাফল লাভ করতে পারেন।

ক্যাস্টর অয়েল এবং পেঁয়াজের রস ব্যবহার করা

ক্যাস্টর অয়েল এবং পেঁয়াজের রস একসঙ্গে মিশে দাড়ির অংশটুকুতে লাগিয়ে কিছুক্ষণ
ম্যাসাজ করার পর চেহারার উপর এই ভাবেই সারারাত অব্দি তেলের মিশ্রণটি রেখে দিলে খুব দ্রুত দাড়ি ঘন
হতে পারে।শুধু তাই নয় এই দুইটি উপাদানের সংমিশ্রণ চেহারায় লাগানোর ফলে
চেহারায় দাড়ি গজানোর মাত্রাও বৃদ্ধি পায়।

পেঁয়াজের রস এবং আমন্ড অয়েল ব্যবহার করা

দাড়ি ঘন করার জন্য প্রথমেই দাড়ি সেভ করে নিয়ে ত্বক ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে
পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর ২ থেকে ৩ টা পেঁয়াজ পেস্ট করে নিয়ে
মুখের মধ্যে দাড়ির অংশটুকুতে লাগিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করতে হবে। আনুমানিক ১০   থেকে ১৫ মিনিট ম্যাসাজ করার পর পুরো মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন। 

আরো পড়ুনঃ বিয়ের পর মেয়েরা মোটা হয় কেন বিস্তারিত জেনে নিন

এবার মুখ ধুয়ে নেওয়ার পর মুখ ভালোভাবে মুছে নিয়ে দাড়ির অংশটুকুতে আমন্ড অয়েল
লাগিয়ে নিয়ে সারারাত রেখে দিতে হবে এবং পরবর্তীতে সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে ঠান্ডা
পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এই প্রক্রিয়াটি আপনি আনুমানিক ১৫   দিন পর্যন্ত নিয়মিত ফলো করতে পারলে আপনার দাড়ি নিমিষেই অনেক ঘন হয়ে উঠবে।

ইউক্যলিটাস পাতার পেস্ট ব্যবহার করা

ইউক্যলিটাস পাতা চেহারায় দাড়ি গজাতে এবং দাড়ির ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে অগ্রণী
ভূমিকা পালন করে থাকে।এর জন্য আপনাকে ইউক্যলিটাস পাতার পেস্ট
তৈরি করে নিয়ে আপনার চেহারার যে জায়গায় দাড়ি রয়েছে সেই জায়গাটুকুতে
পেস্ট লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর আনুমানিক ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর ভালোভাবে
ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। ২/১ দিন পর পর নিয়মিত
এইভাবে ইউক্যলিটাস পাতার পেস্ট ব্যবহার করার মাধ্যমে নিমিষেই আপনার চেহারার দাড়ি ঘন
হয়ে উঠবে।

দাড়ি গজানোর ইসলামিক উপায় । দাড়ি গজানোর দোয়া

ইসলাম ধর্মাবলম্বী পুরুষদের জন্য দাড়ি রাখা সুন্নত। আমাদের রাসূল হযরত
মুহাম্মদ (সাঃ)-এর দাড়ি ছিল।ইসলাম ধর্মে প্রথমত ফরজ কাজগুলো করা
প্রত্যেক মুসল্লিদের জন্য অনিবার্য। তারপর আসে সুন্নত কাজগুলো। যেগুলো করার মাধ্যমে
আপনি অতিরিক্ত কিছু সোওয়াব এবং নিয়ামত লাভ করতে পারেন। এই ধরনের একটি সুন্নত কাজ হলো দাড়ি
রাখা। কিন্তু চিন্তার বিষয় হলো অনেকেরই দাড়ি গজায় না কিংবা দাড়ি গজালেও সেই
দাড়ি ঘন হয় না। 

তবে চিন্তার কোন কারণ নেই কেননা এই বিষয়ে ইসলাম ধর্মে একটি যথাযথ উপায় বর্ণনা
করা হয়েছে।আর দাড়ি গজানোর ইসলামিক উপায় বা দাড়ি গজানোর
দোয়াটি পবিত্র কুরআনুল কারীমের সূরাতুল আলে ইমরানের ১৫৪ নম্বর আয়াতে
উল্লেখিত রয়েছে। এই আয়াতটি হলো-

বাংলা উচ্চারণঃ “ওল্লহু আলিমুম্ম বিজা তিছ ছুদূর”।

উপরে উল্লেখিত দাড়ি গজানোর দোয়াটি বা দাড়ি গজানোর ইসলামিক উপায়টি অনুসরণ
করে ফলাফল পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই দৈনিক ১২ বার এই আয়াতটি পাঠ করার পর এক গ্লাস
পরিষ্কার পানিতে ফু দিতে হবে। তারপর ফু দেওয়া পানি দিয়ে আপনাকে
আপনার মুখমণ্ডল ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।এভাবেই আপনি ২৯ দিন পর্যন্ত এই
আমলটি মহান আল্লাহ তা,আলার উপর ভরসা রেখে চালিয়ে যাবেন। 

তাহলেই আশা করা যায় যে, আপনি আমলটির দ্বারা উপকৃত হতে পারবেন। তবে এখানে একটি
বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আপনি যখন উক্ত আয়াতটি পড়ে ফু দেওয়া পানি
দিয়ে আপনার মুখ ধুবেন তখন যেন সেই পানি কোন দেয়াল কিংবা অপবিত্র
জায়গায় না প্রবাহিত হয়। আপনি চেষ্টা করবেন যেন এই পানি কোন গাছের গোড়ায় প্রবাহিত হতে পারে।

দাড়ি গজানোর ঔষধ 

সাধারণত বয়সন্ধিকালেরশুরুর দিক থেকেই ছেলেদের দাড়ি গজানো শুরু হয়। কেননা এই সময় ছেলেদের শরীরের মধ্যে টেস্টোস্টেরন নামক হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে প্রাকৃতিকভাবেই ছেলেদের চেহারায় দাড়ি গজাতে শুরু করে। কিন্তু কিছু কিছু
ব্যতিক্রম ক্ষেত্র বিশেষে যেসব ছেলেদের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ঘাটতি দেখা
দেয় তাদের বয়সন্ধিকাল শুরু হওয়ার পরেও কিংবা উপযুক্ত বয়স হওয়ার পরেও
চেহারায় দাড়ি গজায় না। এই রকম ব্যতিক্রম ক্ষেত্র বিশেষে আপনি চাইলে দাড়ি গজানোর ঔষধ ব্যবহার করার মাধ্যমে চেহারায় দাড়ি গজাতে পারেন।

দাড়ি গজানোর ঔষধঃ মিনোক্সিডিল (Minoxidil)

দাড়ি গজানোর একটি ওষুধের নাম হলো মিনোক্সিডিল (Minoxidil)। এটা এক
ধরনের স্প্রে যা সাধারণত মাথার চুল কিংবা দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে
থাকে। তাই অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, দাড়ি গজানোর সমস্যা কিংবা মাথায় টাক
পড়ার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে অনেক চিকিৎসক এই স্প্রেটি ব্যবহার
করার জন্য রোগীদেরকে পরামর্শ দিয়ে থাকে। 

সাধারণত দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে এই স্প্রেটি ১৮ বছরের বেশি বয়স্ক ছেলেদের
ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় এবং এটা ব্যবহারের নিয়ম হলো একটি ড্রপারের সাহায্যে দাড়ি গজানোর জায়গাটুকুতে ১ মিলি গ্রাম পরিমাণ কিংবা ৮-১০টি
স্প্রে করে দিনের মধ্যে অন্তত ২ বার ব্যবহার করা। তবে এক্ষেত্রে আমরা
আপনাকে এটাই পরামর্শ দিব যে, এই ধরনের স্প্রে বা যেকোনো ধরনের ওষুধ ব্যবহার করার
পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করবেন এবং চিকিৎসকের
অনুমোদিত মাত্রা অনুযায়ী এই ওষুধটি প্রয়োগ করবেন। 

তা নাহলে পরবর্তীতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এছাড়াও মিনোক্সিডিল
(Minoxidil) ব্যবহার করার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেমন- ত্বকে লালচে ভাব
দেখা দেওয়া, মাথা ব্যথা অনুভূত হওয়া, হাতের অংশ কিংবা পিঠের অংশে
চুলের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি।

দাড়ি গজানোর উপায় – দাড়ি ঘন করার উপায়ঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আমরা আমাদের এই পোস্টের মধ্যে দাড়ি গজানোর উপায়, দাড়ি ঘন
করার উপায়, মুখে দাড়ি গজানোর তেল, চাপ দাড়ি গজানোর উপায়, দাড়ি গজানোর
ইসলামিক উপায়, দাড়ি গজানোর দোয়া এবং দাড়ি গজানোর ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করেছি। আশা করছি আমাদের এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি এতক্ষণে দাড়ি গজানোর পদ্ধতি সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়বস্তু সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানতে
পেরেছেন এবং এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি উপকৃত হয়েছেন। 

আপনি যদি পরবর্তীতেও এই রকম নতুন নতুন তথ্য সম্বলিত পোস্ট পড়তে চান তাহলে নিয়মিত
আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ।